খিচুড়ি বা জাউ সিলেট অঞ্চলের ধর্মপ্রাণ মানুষের সবচেয়ে মশহুর এবং প্রিয় ইফতারি। খিচুড়ির সাথে চানা-পিঁয়াজু না থাকলে ইফতারের পূর্ণতা আসেনা। ইফতারি আইটেমে আর কিছু থাক বা না থাক, খিচুড়ি থাকা চাইই চাই। সারাদিন উপবাসের পর ভাজা-পুড়া খাবারের চেয়ে সাদামাঠা খিচুড়ি খাবার সবাই স্বাস্থ্যসম্মত মনে করে। ইফতারিতে খিচুড়ি সিলেট অঞ্চলের প্রাচীন এক রেওয়াজ।
খিচুড়ি অনেকভাবে রাঁধা যায়। যেমন, চাল-ডাল একসাথে, শুধু চাল দিয়ে, চালের সাথে চুনের পানি দিয়ে (চুনের জাউ) এবং ভুনা খিচুড়ি। আজ আমি ডাল-চাল দিয়ে খিচুড়ি কিভাবে রাঁধতে হয় দেখাব। অনেকে বলতে পারেন খিচুড়ির মতো এতো সহজ খাবার শেখার কী আছে? সিলেট ছাড়া অন্যান্য জেলার লোক খিচুড়ি বলতে ভুনা খিচুড়িকে বুঝে। এ নিয়ে আমার কাজের কলীগদের সাথে অনেক তর্কও হয়। তাই সিলেটের ঐতিহ্যবাহী খিচুড়ি তাঁদেরকে দেখানো এবং শেখানোর জন্য আমার এই সামান্য চেষ্টা।
রমজানে যাদের ইফিতারিতে খিচুড়ি খেতে পছন্দ, তারা রেসিপি দেখে নিতে পারেন।
উপকরণঃ-
৫-৬জনের জন্য খিচুড়ি করতে (8 oz) কন্টেইনারে আনুমানিক ১০০গ্রাম চাল এবং ১০০গ্রাম মসূর ডাল নিয়েছি।
২টি পেঁয়াজ লম্বা করে কাটা
অর্ধেক কাপ তেল/ঘি, তবে তেল আমার পছন্দ।
মেথি ২ চিমটি
১ইঞ্চি সাইজের আদা চপ করে কাটা।
লবন স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালীঃ-
চাল এবং ডাল ভালভাবে ধুয়ে আধাঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। পাতিলে চাল থেকে ১ইঞ্চি পরিমান উপরে পানি রেখে ২টি পেঁয়াজের ১টি, কাপের অর্ধেক তেল এবং উপরে বর্ণিত সব উপকরণ একসাথে দিয়ে ফুল আগুনে চুলায় বসিয়ে দিন।
৮-১০মিনিট পর পানি ফুটতে শুরু করলে আগুন মিডিয়াম করে ১০মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং ঢাকনি কিছুটা সরিয়ে ফাক করে রেখে দিন। কারণ ঢাকা থাকলে পাতিল বেয়ে পানি পড়ার সম্ভাবনা থাকে তাই কিছুটা ফাক রাখা ভাল তাতে বাস্প বের হয়ে যায়।
১০মিনিট পর আগুন একদম কমিয়ে আরো ২০মিনিট রাখুন এবং কিছুক্ষণ পরপর নেড়ে আবার ঢেকে রাখুন। যত নাড়বেন তত ভাল, আস্তো চাল ভেঙে যাবে এবং পাতিলে লাগবেনা। চাল ভাঙলে খিচুড়ি আরো মাজাদার হয়।
এবার অন্য একটি ফ্রাইংপ্যানে অবশিষ্ট পেঁয়াজ ও তেল প্যানে ভেজে খিচুড়ির উপর ঢেলে ভাল করে মিক্স করে আগুন বন্ধ করে দিন। ব্যাস হয়ে গেল সিলেটের ঐতিহ্যবাহী খিচুড়ি।
প্লেইটে ছোলা এবং পিয়াজুর সাথে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।